আজকে আমরা আলোচনা করব রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ নিয়ে সাওম বা রোজা ভঙ্গের কারণ ১৯টি নাকি কম বেশি রয়েছে আসলে roza bonger karon কয়টি ও কি কি এ সকল বিষয় নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব
রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ
নামাজ ভঙ্গের কারণ হচ্ছে 19 টি এজন্য আমরা অনেকেই মনে করি যে রোজা ভঙ্গের কারণও ১৯ টি রোজা ভঙ্গের কারণ এরকম ভাবে নির্দিষ্ট করে সাধারণত লেখা হয় না .
তারপরও আমি নিচে 19 টি রোজা ভঙ্গের কারণ আপনাদের সাথে উপস্থাপনা করছি সাবলীল ভাষায় যেন সকল বয়সী লোকেই বুঝতে পারে
চাইলে আরো নফল রোজার নিয়ত ও ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারেন
রোজা ভঙ্গের কারণ ১৯টি
১. রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় কোন কিছু খাওয়া বা পান করা অথবা সহবাস করা এতে কাজা ও কাফফারা উভয়ই (একাধারে দুই মাস রোজা রাখা) ওয়াজিব হয়।
২. নাকে , কানে তেল বা ঔষধ ইত্যাদি প্রবেশ করানো।
৩. নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করা।
৪. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করা।
৫. বমি আসার পর তা গিলে ফেলা।
৬. কুলি করার সময় বা যেকোন ভাবে পানি গলার ভিতরে ঢুকে পড়া।
৭. দাতে আটকে থাকা ছোলা বা তার চেয়ে বড় ধরনের খাদ্য কনা গিলে ফেলা।
৮. কাঁচা চাল বা আটার খামির অথবা একত্রে অনেক লবণ খেয়ে ফেলা।
৯. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়া অবস্থায় সুবহে সাদিকের পর জাগ্রত হওয়া।
১০. ধূমপান করা বা ইচ্ছাকৃতভাবে আগার বাতি কিংবা অন্য কোন সুগন্ধি ধোঁয়া গলাতকরণ করা বা নাকের মধ্যে টেনে নেওয়া।
১১. মহিলাদের মাসিক অথবা সন্তান জন্মদানের পর ঋতুস্রাব হওয়া।
১২. গ্লুকোজ বা শক্তিবর্ধক ইঞ্জেকশন অথবা স্যালাইন গ্রহণ করলে।
১৩.পায়খানা বা প্রস্রাবের রাস্তা দিয়া ঔষধ বা কোন কিছু প্রবেশ করানো।
১৪. রোজাদার ব্যক্তিকে জোর করে কিছু খাওয়ালে বা পান করলে।
১৫. ইফতারের সময় হয়েছে মনে করে সূর্যাস্তের পূর্বেই ইফতার করলে।
১৬. সুবহে সাদিকের সময় বাকি আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পর কিছু খেলে।
১৭. ভুল করে কোনো কিছু খেয়ে ফেললে, রোজা ভেঙ্গে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে আরও কিছু খেলে।
১৮. দাঁত দিয়ে রক্ত বের বের হওয়ার পর যদি তা থুতুর চাইতে বেশি পরিমাণে হয় এবং তা কণ্ঠনালিতে চলে যাওয়া।
১৯. হস্তমৈথুন্য করা।
যে সকল কারণে রোজা মাখরুহ হয়
১. মিথ্যা কথা বললে।
২. গীবত অথবা চোগলখোরামি করলে।
৩. গালাগালি অথবা ঝগড়া ফেসাদে লিপ্ত হলে।
৪. সিনেমা দেখলে অথবা অন্য কোন কবিরা গুনাহে লিপ্ত হলে।
৫. সারাদিন নাপাক অবস্থায় অবস্থান করলে।
৬. রোজার কারণে অস্থিরতা বা কাতরতা বারবার প্রকাশ করলে।
৭. কয়লা,মাজন,টুথ পাউডার,টুথপেস্ট অথবা গোল ইত্যাদি দিয়ে দাঁত মাজন করলে।
৮. অনর্থক কোন জিনিস মুখের ভিতরে নিয়ে চিবালে।
roza bonger karon সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণাসমূহ
নিম্নোক্ত এই কারণগুলো ছাড়াও আরও কিছু বিষয়কে রোজা ভাঙ্গার কারণ হিসেবে মনে করা হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেগুলো রোজা ভঙ্গের কোনও কারণই নয়।
অর্থাৎ, এই কথাগুলো সমাজে প্রচিলত থাকার ফলে রোজাদাররা সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। এতে তিনি নিজে যেমন বিভ্রান্তে থাকেন,তেমনি তার আশেপাশের মানুষকেও বিড়ম্বনায় ফেলেন।
তাই, রোজা সম্পর্কে তেমনই প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা সম্পর্কে আমাদের জেনে নেওয়া প্রয়োজন।যেমনঃ
১. মুখের লালা গিলে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যায় এমন ধারণা ঠিক নয়
২. নখ এবং চুল কাটা যাবে না এমন ধারণা ঠিক নয়
৩. দাড়ি কামানো যাবে না এমন ধারণা ঠিক নয়
৪. সাধারণত বলা হয়ে থাকে রমজানে যৌন সম্পর্ক করা যাবে না এমন ধারণা ঠিক নয়
৫. সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে না এমন ধারণা ঠিক নয়
৬. ভুল করে পানাহার করে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যায় এমন ধারণা ঠিক নয়
৭. আবার অনেকেই মনে করেন রোজা রেখে ধূমপান করলে রোজা ভাঙ্গে না ৮.কিন্তু না রোজা রেখে ধুম পান করলে রোজা ভেঙে যায়।
৯. রান্নার সময় খাবারের স্বাদ গ্রহণ করা যাবে না(খুব দরকার হলে হালকা চেখে অতঃপর থুথু ফেলে দিতে হবে )এক্ষেত্রে রোজা ভাঙ্গে না, তবে না টেস্ট করাই উত্তম।
মুখের লালা গিলে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যায়
একটা প্রচলিত চর্চা আছে যে মুখের লালা গিলে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
আর এই ভুল ধারণার কারণে মানুষ যেখানে সেখানে থুথু ফেলে পরিবেশের ক্ষতি করে আর আশেপাশের মানুষ ও অসস্তিতে পড়ে।
অধ্যাপক শামছুল আলম এই বিষয় নিয়ে বলেছেন-
“মুখের লালা গিলে ফেললে কোন সমস্যা নেই এতে রোজা ভেঙ্গে যাবে না। এ বিষয়ে ইসলাম ধর্মে কোনপ্রকার নিষেধাজ্ঞা নেই তবে যদি ইন্টার্নাল কোন কিছু আপনার পেটে ইচ্ছেকৃত ভাবে ঢুকলে তখনই কেবল রোজা ভেঙ্গে যাবে না।”
এছাড়া অন্য কারও মুখের লালা যদি আপনার নিজের মুখে চলে যায়, তখন আর রোজা থাকবে না। অর্থাৎ, রোজারত অবস্থায় আপনার সঙ্গীকে কখনো চুমু খাওয়া যাবে না।

রোজা থেকে দাঁত ব্রাশ করা যাবে না
প্রচলিত নানা গুজব রয়েছে যেমন রোজা থেকে দাঁত ব্রাশ করা যাবে না, রোজাদার ব্যক্তির মুখের দুরগন্ধে কখনো বিরক্ত হওয়া যাবে না। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে দাঁত ব্রাশ না করলে মুখে দুর্গন্ধ তৈরি হয় যার ফলে কথা বলার সময় চারপাশে এই গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
কিন্তু এ বিষয়ে মি. আলম প্রথমে এক কথায় বলেছেন, “দাঁত ব্রাশ করলে রোজার ভেঙ্গে যাবে না।”
সুতরাং, আপনি যদি সাবধানতা বজায় রেখে এবং পেস্ট না ব্যবহার করে শুধু ব্রাশ নিয়ে দাঁত ব্রাশ করেন অথবা মেসওয়াক ব্যবহার করেন তাহলে কোন সমস্যা নেই।
সাওম বা রোজা ভঙ্গের কারণ নিয়ে শেষ কথা
আশাকরি সাওম/রোজা ভঙ্গের কারণ গুলো নিয়ে আপনাদের আর কোন প্রশ্ন থাকবে না। আমি চেষ্টা করেছি গুরুত্বপুর্ণ পয়েন্ট গুলো এই পোস্টে তুলে ধরার।
যদি আপনার রোজা ভঙ্গের কারণ নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টে জানাবেন। আর আমাদের এই পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

আমি MD. Abul Kalam Azad — Bangali24.com-এর প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক।
আমি “নামের অর্থ” বিষয়ক গভীর ব্লগসহ হেলথ, বিউটি, ইসলামিক, প্রযুক্তি, শিক্ষা ও ট্রেন্ডিং বিষয়ে মানসম্পন্ন ও বিশ্বাসযোগ্য কনটেন্ট তৈরি করি।
আমার লক্ষ্য আপনার জীবনকে সহজ, সুন্দর ও সমৃদ্ধ করা।





