ব্যাংক এশিয়া স্বাধীন মাস্টার কার্ড বর্তমানে খুব সহজেই কোনো পাসপোর্ট ছাড়া ব্যাংক এশিয়া ডুয়েল কারেন্সি মাস্টার কার্ড পাওয়া যায়। যারা পাসপোর্ট নেই বলে স্বাধীন মাস্টার কার্ড করতে ভয় পাচ্ছেন তাদের জন্য সুখবর ,আপনি পাসপোর্ট ছাড়াই এই কার্ডটি পেতে পারেন। তাহলে চলুন ব্যাঙ্ক এশিয়ার এই স্বাধীন মাস্টার কার্ড কিভাবে পেতে পারেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক
সিটি ব্যাংকের মাস্টার কার্ড এবং ইসলামী ব্যাংকের ডুয়েল কারেন্সি কার্ড করার নিয়ম
এক পলকে
ব্যাংক এশিয়া স্বাধীন মাস্টার কার্ডের সুবিধা সমূহ
এই কার্ডটি ব্যাবহারে আপনি যে যে সুবিধা পাবেন তা নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো-
- ব্যাঙ্ক এশিয়ার এই স্বাধীন মাস্টার কার্ড মূলত এটি একটি ডুয়েল কারেন্সি ক্রেডিট কার্ড। আপনি এই কার্ডটি ব্যবহার করে এতে বাংলাদেশি টাকা এবং US ডলার উভয়ই ব্যবহার করে লেনদেন করতে পারবেন। তবে এখানে বলে রাখা আবশ্যক US ডলার ব্যবহার করতে আপনাকে অবশ্যই পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং ব্যাংকে পাসপোর্ট দ্বারা এন্ডোর্সমেন্ট করিয়ে অতঃপর আপনি US ডলার ব্যবহার করতে পারবেন এর আগে না।
- অনলাইনে উপার্জিত ফ্রিল্যান্সারদের অর্জিত আয় বৈধ উপায়ে দেশে আনবার জন্য ব্যাঙ্ক এশিয়ার এই স্বাধীন মাস্টার কার্ডটি খবই জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ন। এই কার্ডটির লোগো সম্বলিত যেকোনো দেশ থেকে আপনার ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অর্জিত অর্থ এই স্বাধীন মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে খুব সহজেই দেশে আনতে পারবেন।
- আপনার আয়কৃত অর্থের ৭০% ফরেন পার্টে ব্যয় করতে পারবেন।যেমন- মনে করেন আপনি ফাইভারে কাজ করেন।এক্ষেত্রে আপনার আয়কৃত অর্থ ১০০ ডলার।এখন আপনি এই ১০০ডলার যদি ব্যাংক এশিয়া স্বাধীন মাস্টারকার্ড দ্বারা বাংলাদেশে আনলেন তবে এ থেকে আপনি সর্বোচ্চ ৭০ডলার USD পার্টে ব্যয় করতে পারবেন। এবং বাকি ৩০ডলার বা সমমূল্যের টাকা বাংলাদেশ থেকে উঠাতে পারবেন।এছাড়াও আপনি ইচ্ছা করলে পুরো টাকাই বাংলাদেশ থেকে উঠাতে পারবেন।এক্ষেত্রে কোনো ধরণের বিধি নিষেধ নেই। তবে USD পার্ট থেকে শপিং করলে তা উপার্জিত অর্থের ৭০% বেশি খরচ করা যাবে না।
- দেশ বিদেশ থেকে ATM এবং POS মেশিনের সাহায্যে টাকা উত্তোলন ও পেমেন্ট সুবিধা রয়েছে।
- দেশে ও দেশের বাইরে থেকে ই-কর্মার্স এবং অনলাইনে সব রকমের কেনাকাটা করা যায়।
- ডাটা সিকিউরিটি এনশিওর করতে কার্ডটিতে মাইক্রোচিপ সংযুক্ত থাকবে।
- প্রতিবার ট্রানজেকশনে যেমন -পেমেন্ট আসা,টাকা জমা, এবং টাকা উত্তোলনে আপনার মেবাইলে SMS এলার্ট আসবে।
- ইন্টারনেটের ব্যাংকিং সুবিধা সহ ২৪ ঘন্টার কল সেন্টার সার্ভিস থাকবে।
ব্যাংক এশিয়া ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার নিয়ম
আপনি যদি ব্যাংক এশিয়ায় একটি একাউন্ট খোলতে চান তাহলে আপনাকে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। এই কার্ডটি পেতে আপনাকে ব্যাংক এশিয়া থেকে অতিসহজ কিছু প্রসেস সম্পন্ন করে স্বাধীন মাস্টারকার্ডটি পেতে হবে।
স্বাধীন মাস্টারকার্ডটি পাওয়ার নিয়মাবলী সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো –
প্রথমে আপনাকে ব্যাংক এশিয়ার কোনো ব্রাঞ্চে বা শাখায় যোগাযোগ করতে হবে।ব্রাঞ্চে থাকা কর্মকর্তাদের জানাতে হবে আপনি ঠিক কোন মাস্টারকার্ডটি গ্রহন করতে চান।
অতঃপর কার্ডটি পেতে আপনাকে একটি ফর্ম দেওয়া হবে এবং ফরমটি আপনাকে পূরণ করতে হবে।
ফর্ম পূরণ করার পর আপনার কাছে বেশ কিছু ডকুমেন্টস চাইবে উক্ত ডকুমেন্টস সমূহ ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে সাবমিট করুন।
কার্ডটি পেতে আপনাকে কিছু অর্থ প্রদান করতে হবে। প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান করুন এবং কার্ডটি গ্রহণ করুন।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র
পূরণকৃত ফর্ম বা আবেদন পত্র
জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা পাসপোর্ট লাগবে
ট্যাক্স রিটার্ন কপি অথবা TIN সার্টিফিকেট লাগবে
দুই কপি রঙিন ছবি
বেতন স্লিপ বা আয়কর সংক্রান্ত নথিপত্র এবং ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
কাজের আদেশ/ পেমেন্ট রিসিভ কপি/মার্কেট প্লেস ID নম্বর/ ফ্রীলান্সিং এর কাগজ পত্র
ব্যাংক এশিয়া ভিসা ডেবিট কার্ড
Bank Asia তাদের একাউন্ট ধারীদের জন্য ক্লাসিক ডুয়াল ভিসা ডেবিট কার্ড সরবরাহ করে। এটি বিশ্বব্যাপী ব্যবহার যোগ্য একটি দৈত মুদ্রা ক্রেডিট কার্ড যা ব্যাংক এশিয়া গ্রাহকদের প্রদান করে থাকে।
ব্যাংক এশিয়া ভিসা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে আপনি এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন,অনলাইন লেনদেন,(POS) মেশিন ইত্যাদির মাধ্যমে কেনাকাটা করতে পারবেন।
এটি অর্থ উত্তোলন,, বিল পরিশোধ , অনলাইন ট্রানজেকশন,অর্থ উত্তোলনের সুবিধা দিয়ে থাকে। এছাড়াও ব্যাংক এশিয়া ভিসা ডেবিট কার্ডের আরো বিশেষ কিছু সুবিধাদি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো –
- এটি ডুয়েল কারেন্সি ক্রেডিট কার্ড হিসেবে পাওয়া যায়
- বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতার কারণে এটি যে কোনো এটিএম, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ,POS মেশিন ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও অনলাইন লেনদেনের ক্ষেত্রে অনলাইনে শপিং, বিল পেমেন্ট ইত্যাদি সুবিধাদি পাওয়া যায়।
- এই কার্ডটির মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো দেশের এটিএম থেকে অর্থ উত্তোলন করা যায়।এই কার্ডটি দ্বারা ইলেকট্রিসিটি এবং অন্যান্য ইউটিলিটি বিল পেমেন্টের সুবিধা পাওয়া যায়
- এসকল গুরুত্ব পূর্ণ সুবিধাদি ছাড়াও এই কার্ডটি কার্ড চেক , রিওয়ার্ড পয়েন্ট ,ই- বিবৃতি ,SMS এলার্ট সার্ভিস ,সহজ ক্রয় সহ ২৪ ঘন্টা কল সেন্টারইত্যাদি সুবিধাও দিয়ে থাকে।
ব্যাংক এশিয়া ডুয়েল কারেন্সি কার্ড
ব্যাংক এশিয়া স্বাধীন মাস্টারকার্ডটি একটি ডুয়েল কারেন্সি কার্ড। এই ডুয়েল কারেন্সি মাস্টারকার্ড দ্বারা দেশ ও দেশের বাহিরে আপনি বাংলাদেশি টাকা এবং আন্তর্জাতিক USD ডলার লেনদেন করতে পারবেন।
ব্যক্তি অথবা কোম্পানি উভয় নামে এই কার্ডটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আপনার অর্জিত বিদেশি অর্থের ৭০% স্বাধীন মাস্টার কার্ডে রাখা যাবে এবং যার দ্বারা আপনি অনলাইন কেনাকাটা বা ই-কমার্স লেনদেন করার সুবিধা পাবেন। এবং এই কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য রয়েছে বীমা সুবিধা।
এই কার্ডটি ডুয়েল কারেন্সি হওয়ার কারনে শতভাগ দেশিয় মুদ্রায় রূপান্তর করার সুবিধা রয়েছে যার দ্বারা দেশের অর্থনীতিতে ফ্রিল্যান্সারদের উপার্জিত বিদেশী অর্থের পূর্ণ ব্যবহার ও বিনিয়োগ নিশ্চিত সম্ভব।
দেশ-বিদেশে ATM এবং POS মেশি দ্বারা অর্থ উত্তোলন,পেমেন্ট সুযোগ ,ই-কর্মার্স ও অনলাইনে কেনাকাটাসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়।
ব্যাংক এশিয়া ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের চার্জ সমূহ
- ব্যাংক এশিয়া ডেবিট কার্ড ইস্যু করতে সাধারণত এককালীন চার্জ প্রযোজ্য হয়।তবে রিনিউয়ালের জন্য বার্ষিক চার্জ দিতে হয়। আবার ডুয়েল কারেন্সি কার্ডের জন্য আলাদা চার্জ প্রযোজ্য হয়।
- এটিএম-এ লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংক এশিয়া সাধারণত কোনো ফি নেয় না। তবে অন্যন্য ব্যাংকের এটিএম-এ লেনদেনের জন্য প্রায় ১৫-৩০ টাকা পর্যন্ত চার্জ ধার্য করা হয়।
- ইন্টারন্যাশনাল লেনদেনের ক্ষেত্রে ডুয়েল কারেন্সি কার্ড ব্যাবহারে ভিন্ন মুদ্রার জন্য ট্রানজেকশন চার্জ দিতে হয়।
- পিন পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে সাধারণত ৫০০ টাকা পর্যন্ত চার্জ আরোপিত হয়ে থাকে।
আবার ব্যাংক এশিয়া ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে বার্ষিক ও এককালীন ফি ডেভিট কার্ডের চেয়ে তুলনা মূলক বেশি হয়ে থাকে। সাধারণত ক্রেডিট কার্ডের প্রকারের উপর ভিত্তি করে এর চার্জ আরোপ করা হয়।
যেমনঃ ক্লাসিক সিলভার কার্ড: ১,০০০ টাকা
গোল্ড কার্ড: ২,০০০ টাকা
ভিসা সিগনেচার কার্ড: ৭,০০০ টাকা
প্লাটিনাম বা টাইটানিয়াম কার্ড: ৩,০০০ টাকা
তাছাড়া অন্যন্য চার্জ সমূহ প্রায় একই হয়ে থাকে। তবে ডুয়েল কারেন্সির ক্ষেত্রে স্থানীয় ও ইন্টারন্যাশনাল লেনদেনের জন্য আলাদা চার্জ প্রযোজ্য হয়ে থাকে।
ব্যাংক এশিয়া ডিপোজিট
ব্যাংক এশিয়াতে ডিপোজিট করার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে।এখানে দুটি পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো –
১.ব্যাংকের শাখায় গিয়ে ডিপোজিট করা
এ ক্ষেত্রে নিকটস্থ ব্যাংক এশিয়া শাখার কাউন্টারে গিয়ে ডিপোজিট স্লিপ সংগ্রহ করতে হবে। এবং উক্ত স্লিপে আপনার একাউন্ট নম্বর, নাম এবং জমার পরিমাণ লিখতে হবে।
অতঃপর জমার টাকা ও ডিপোজিট স্লিপ কাউন্টার কর্মকর্তার কাছে জমা দিন।এবং ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকে রিসিট গ্রহণ করুন।
২. ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন (CDM) ব্যবহার দ্বারা
এ ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে নিকটস্থ CDM লোকেশন খুঁজে বের করে অতঃপর আপনার ডেবিট কার্ড দ্বারা মেশিনে প্রবেশ করতে হবেএবং ডিপোজিট অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। অতঃপর জমার টাকা মেশিনে দিয়ে ডিপোজিট নিশ্চিত করুন এবং রিসিট গ্রহণ করুন।
তাছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে, বিকাশ, রকেট বা নগদের মাধ্যমে ,এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবহার করে ,BEFTN এর মাধ্যমে ডিপোজিট করা যায়।
ব্যাংক এশিয়া এটিএম কার্ড চার্জ
ব্যাংক এশিয়ার এটিএম কার্ডের চার্জ নির্ভর করে কার্ডের ব্যবহারের পদ্ধতি,ধরণ ও একাউন্টের ধরণ অনুযায়ী। সাধারণত এটিএম কার্ডের ধরন অনুযায়ী এর প্রাথমিক কার্ড ইস্যু ফি ৩০০-৬০০ টাকা হয়ে থাকে।
ব্যাংক এশিয়া এটিএম কার্ডের বার্ষিক চার্জ ৩৪৫ টাকা। ব্যাংক এশিয়ার এটিএমে টাকা উঠানোর ক্ষেত্রে সাধারণত কোনো চার্জ নেই। ব্যাংক এশিয়া থেকে নগদ উত্তোলন চার্জ ফ্রি তবে অন্যান্য নেটওয়ার্কের জন্য চার্জ প্রযোজ্য হয়।
তবে অন্যান্য ব্যাংকের এটিএমে প্রতি লেনদেনে সাধারণত ১৫-২০ টাকা চার্জ কাটতে পারে এবং কার্ড রিপ্লেসমেন্টের ক্ষেত্রে ৩৪৫ টাকা ফি।
I am Hasina Khatun, working in a private bank in Bangladesh and also writing for this website in my free time.