মাস্টার কার্ড কি? মাস্টার কার্ড করতে কি কি লাগে এবং মাস্টার কার্ড এর কাজ কি, তাছাড়া মাস্টার কার্ড এর সুযোগ সুবিধা কি, জনপ্রিয় কিছু মাস্টার কার্ড সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং কোথায় পাওয়া যায় এই মাস্টার কার্ড এই মাস্টার কার্ড করতে কি কি কাগজ পত্র লাগে এবং চার্জ কত টাকা লাগবে এবং মাস্টার কার্ড করার নিয়মাবলী গুলি নিয়ে আলোচনা করেছি, এবং সর্বশেষ দেখানো হয়েছে কিভাবে অনলাইনে মাস্টার কার্ড এর জন্য আবেদন করা যায় এবং মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডের মধ্যে পার্থক্য
আরো দেখুন সিটি ব্যাংকের ডেবিট ক্রেডিট এবং মাস্টার কার্ড চার্জ সুবিধা সমূহ এবং ইসলামী ব্যাংকের ডেবিট ক্রেডিট এবং ডুয়েল কারেন্সি কার্ড
এক পলকে
মাস্টার কার্ড কি
মাস্টার কার্ড হলো বর্তমান বিশ্বে বহুল জনপ্রিয় একটি পেমেন্ট প্রসেসিং সিস্টেম যা বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলুর মাধমে গ্রাহকদের সুযোগ সুবিধা প্রধান করে থাকে। এছাড়াও এটি দ্বারা ই -কমার্স সাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য কেনা কাটা ,টাকা উত্তোলন ,বিল পরিশোধ করা যায়। অর্থাৎ এটি বিভিন্ন সার্ভিস প্রোভাইডারের কাছে দ্রুত ও নিরাপদ পেমেন্ট প্রক্রিয়া।
মাস্টার কার্ড এর কাজ কি
এটি ব্যবহার করে গ্রাহকরা সহজেই বিভিন্ন সেবা যেমন :পণ্য কেনা কাটা ,টাকা উত্তোলন ,বিল পরিশোধ ,শপিং ,অনলাইন স্টোরে ইত্যাদিতে আর্থিক লেনদেন করা যায়।
এটি বিল পরিশোধের একটি দ্রুত ও সহজ মাধ্যম।
এছাড়া ফ্রিলেন্সারদের জন্য এই কার্ডটি অধিক জনপ্রিয় কেননা এর সাহায্যে অতিসহজেই বাহিরের দেশ থেকে তাদের পেমেন্ট কোনো জামেলা ছাড়াই খুব সহজেই দেশে আনতে পারে।
এটি একটি পেমেন্ট ট্রান্সপার কার্ড সুতরাং এটি ইস্যু ও করে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক সমূহ।
মাস্টার কার্ড এর সুযোগ সুবিধা কি
>এটি ব্যবহারে টাকা লেনদেনে সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করে
>তাৎক্ষণিক ভাবে এর লিমিটেশন ব্যবহার করে জরুরি প্রয়োজন মিটানো যায়।
>ঘরে বসেই এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন করা যায়।
>এটি ব্যবহারে টাকা হারানো বা ক্ষতি গ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কোনো প্রকার জালিয়াতি ঘটার সম্ভাবনা নেই।
>নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এটিকে একেবারেই সুদ বিহীন ব্যবহার করা যায়।
জনপ্রিয় কিছু মাস্টার কার্ড
এখানে জনপ্রিয় কিছু মাস্টার কার্ড সম্পর্কে আলোচনা করা হলো –
১.পাইওনিয়ার মাস্টার কার্ড
:এই কার্ডটি বাংলাদেশি ফ্রিলেন্সারদের জন্য খবই জনপ্রিয় একটি মাস্টার কার্ড।
২.গোল্ড মাস্টার কার্ড :এই কার্ডটি ব্যাঙ্ক এশিয়া সাধারণত প্রদান করে থাকে এবং ডুয়াল কারেন্সি কার্ড সিস্টেম।
৩.একুয়া মাস্টার কার্ড :এটি ইস্টার্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃক প্রদত্ত এবং এই কার্ডটিও ডুয়াল কারেন্সি সিস্টেম।
৪.ডাচ বাংলা ব্যাঙ্ক মাস্টার কার্ড :বিভিন্ন অফার ,অনলাইন শপিং ,সুদ কম রেট প্রভৃতি ক্ষেত্রে জনপ্রিয় এ কার্ডটি।
৫.সিটি ব্যাঙ্ক আমেরিকান মাস্টার কার্ড :এটি সিটি ব্যাঙ্ক কর্তৃক প্রদত্ত বিশ্ব বেপী এক্সেস সুবিধা দিয়ে থাক ।
কোথায় পাওয়া যায় মাস্টার কার্ড
যেহেতু এটি আর্থিক লেনদেন এর বিষয় তাই এটি সাধাৰণত ব্যাঙ্ক সমূহ ইস্যু করে থাকে। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক সমূহ যেমনঃ বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাঙ্ক ,স্থানীয় ব্যাঙ্ক সমূহের বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক যেমন ব্র্যাক ব্যাঙ্ক ,ডাচ বাংলা ব্যাঙ্ক ,স্ট্যান্ডার্ড স্টাচার্ড প্রবৃত্তি ব্যাঙ্ক সমূহ ইস্যু থাকে করে।
মাস্টার কার্ড করতে কি কি লাগে
*আপনার একাউন্ট থাকতে হবে
*NID card লাগবে
*পাসপোর্ট সাইজ ২কপি ছবি লাগবে
*ইনকাম প্রমাণপত্র লাগতে পারে
*পাসপোর্ট লাগবে
*আবেদন ফর্ম পুরোন করতে হবে
মাস্টার কার্ড করতে চার্জ কত লাগে
মাস্টার কার্ড করার ক্ষেত্রে কার্ড এর ধরণের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক বিভিন্ন ধরণের চার্জ করতে পারে। এবং কার্ড এর ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন কার্ড এর চার্জ ও ফি আলাদা হয়।
যেমন বার্ষিক ফি , ইস্যু ফি অন্যান্য ফি প্রযোজ্য হয় আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে এককালীন ফি ও নেওয়া হয়। মাস্টার কার্ড করার ক্ষেত্রে যে সকল ব্যাঙ্ক যে রকম চার্জ করে থাকে তার একটি তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো –
ব্যাঙ্ক বাৎসরিক চার্জ
ডাচ বাংলা ব্যাঙ্ক ৯২০ (ভ্যাট সহ )
ব্র্যাক ব্যাঙ্ক ১৫০০[ক্লাসিক ](১৫%ভ্যাট)
সিটি ব্যাঙ্ক ৬০০(১৫%ভ্যাট )
ইস্টার্ন ব্যাঙ্ক ০(বছরে ১৮ বার রেজিস্ট্রেশন করে )
আবার মাস্টার কার্ড এর ধরন অনুসারে চার্জ ভিন্ন হয় এখানে তিন ধরণের মাস্টার কার্ড নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে
- ১.ডেবিট মাস্টার কার্ড: যেটি আপনার সঞ্চয়ী একাউন্টের সাথে যুক্ত থাকবে
- ২.প্রিপেইড মাস্টার কার্ড: এই কার্ড এর অন্যতম সুবিধা হচ্ছে এই কার্ডে আপনি নিজেই টাকা জমা করে রাখতে পারবেন এবং ভ্রমণ বা যাতায়াতে অনলাইন ভিত্তিক যে কোনো সময় ব্যবহার করতে পারবেন। এবং
- ৩.ক্রেডিট মাস্টার কার্ড:এটি আপনার ধারককে একটা নির্দিষ্ট সীমার মাঝে খরচের সুবিধা দিবে। নিচেএই তিন ধরনের মাস্টার কার্ড অনুসারে চার্জ সম্পর্কে উল্লেখ্য করা হলো :
মাস্টার কার্ড প্রথম বার ইস্যু ফি বার্ষিক ফি
ডেবিট মাস্টার কার্ড ৫০০-১০০০ ৩০০-৭০০
প্রিপেইড মাস্টার কার্ড ৫০০-১৫০০ ৫০-১০০
ক্রেডিট মাস্টার কার্ড ৫০০-২০০০ ০০০-৫০০০
লেনদেন এর উপর ভিত্তি করে উক্ত মাস্টার কার্ড গুলোর ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল লেনদেন ফি ২%-৩%
মাস্টার কার্ড করার নিয়মাবলী
মাস্টার কার্ড করার নিয়ম জানতে হলে আপনাকে আগে নির্বাচন করতে হবে আপনি কোন ধরণের মাস্টার কার্ড করতে চান এবং এর পর আপনাকে নির্বাচন করতে হবে আপনি কোন ব্যাংকে এটা করতে চান। এখন আপনি আপনার পছন্দ মতো মাস্টার কার্ডটি বাছাই করার পর আপনার নির্বাচিত ব্যাংকে এটির জন্য একটি আবেদন করতে হবে। নিম্নোক্ত প্রক্রিয়ায় আপনি আবেদনটি করতে পারেন :
মাস্টার কার্ড কিভাবে বানাবো
১.আবেদন ফর্ম সংগ্রহ :আপনার নির্বাচিত ব্যাংকার ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফরমটি সংগ্রহ করতে হবে।
২.আবেদন ফর্ম পুরন :আবেদন ফর্ম পুরন করতে আপনার নিজ্স্ব তথ্য লাগবে যেমন:আপনার নাম ,ঠিকানা ,আপনার পেশা ,আয় -বেয় এর তথ্য অর্থাৎ মাসিক আয়ের উৎস ও পরিমান ,এবং যোগাযোগের জন্য সঠিক তথ্য দিতে হতে পারে এছাড়াও আপনার সামাজিক নিরাপত্তা নাম্বার ও আপনার কর্মসংস্থান সম্পর্কে তথ্য দিতে হতে পারে।
৩.প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা :আবেদন ফর্ম পুরনের জন্য কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে যেমন :
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা পাসপোর্টের ফটোকপি
পাসপোর্ট সাইজের ছবি (সাধারণত ২ কপি)
ঠিকানা প্রমাণ (যেমন ইউটিলিটি বিল, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, বা ঠিকানা সনদ)
আয়ের প্রমাণপত্র (ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে)
ব্যাংক স্টেটমেন্ট (বিশেষত ক্রেডিট কার্ডের জন্য)
কিভাবে অনলাইনে মাস্টার কার্ড এর জন্য আবেদন করা যায়
অনলাইনে মাস্টার কার্ড এর জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে প্রথমে ওই ধরণের ব্যাঙ্কের খোঁজ নিতে হবে যে ব্যাঙ্ক গুলো অনলাইনে মাস্টার কার্ড অফার করছে। অতঃপর উক্ত ব্যাংকের ওয়েবসাইটে লগইন এর মাধ্যমে আপনাকে আবেদনটি করতে হবে।নিম্নোক্ত প্রক্রিয়ায় অনলাইন মাস্টার কার্ড এর জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায় :-
১.ব্যাংকের ওয়েবসাইটে লগইন করুন:আপনাকে প্রথমে উক্ত ব্যাংকের ওয়েবসাইটে লগইন করতে হবে অথবা মোবাইল APP ডাউনলোড করে আপনার ফোন নম্বর দিয়ে তাতে লগইন করুন।
২.এপ্লাই অপশন বাছাই করুন :মোবাইল APP বা ওয়েবসাইটে “ক্রেডিট কার্ড এপ্লিকেশন “অপশনটি খোঁজে বের করুন এবং আপনার পছন্দ অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ডটি বাছাই করুন
৩.এপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করুন :আপনার ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য যেমন::আপনার নাম ,ঠিকানা ,ইমেইল,ফোন নম্বর ,জন্ম তারিখ ইত্যাদির প্রয়োজন হবে।এছাড়াও আপনার মাসিক আয়ের উৎস ও পরিমান এ সম্পর্কে তথ্য দিতে হতে পারে।
৪.কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাবমিট করুন :আপনার NID card ,পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি,চাকরির নথিপত্র ও ঠিকানার প্রমাণপত্র।
৫.এপ্লিকেশন সাবমিট করুন :এপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ শেষ হলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন এবং আবেদন সাবমিট করুন। অতঃপর আপনার আবেদন ব্যাংকের কাছে পাঠানো হবে এবং ব্যাঙ্ক সেটি যাচাই করবে।
৬.. ব্যাংকের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করুন:আপনার আবেদন যাচাই করে ব্যাঙ্ক আপনার পছন্দ অনুযায়ী আপনার মাস্টারকার্ডটি প্রদান করবে। এ বিষয়টি সাধারণতো আপনাকে প্ফোনে বা ইমেইল এর মাধ্যমে জানানো হবে।
বিঃদ্রঃ এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার নির্দিষ্ট ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে যোগাযোগ করে অনলাইনে মাস্টার কার্ড এর আবেদনের জন্য সহায়তা পেতে পারেন।
মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডের মধ্যে পার্থক্য
আন্তর্জাতিক ভাবে জনপ্রিয়তার দিক থেকে মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ড উভয়ই খুবই গরুত্বপুর্ণ। এদের ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে তেমন কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত না হলেও বিশেষ কিছু মূল পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো –
জপ্রিয়তার দিক থেকে মাস্টার কার্ডের কবারেজ অনেক বেশি থাকলেও ভিসা কার্ড এর প্রায় ২০০ টিরও বেশি দেশে গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে ফলে বিশ্বে এর জনপ্রিতাও বেশি।
সিকিউরিটির ক্ষেত্রে ভিসা কার্ড “ভিসা সিকিউর ” নামক সিকিউরিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে যেটি প্রতারণা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সাহায্য করে আর মাস্টার কার্ড “মাস্টার কার্ড সিকিউর কোড “ব্যক্তিগত কোড ব্যবহারের মাধ্যমে অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে।
এছাড়াও উভয় কার্ডের প্রোগ্রাম গুলি ভিন্ন হতে পারে। এসব সাধারণ কিছু পার্থক্য ছাড়া মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না।
সাধারণভাবে উভয় কার্ড একই ধরণের সেবা প্রদান করে থাকে। আবার উভয় কার্ড এর ব্যবহারের ক্ষেত্র যেমন:অনলাইন স্টোরে ,বেবসায়িক ক্ষেত্র ,টাকা লেনদেন ,বিল পরিশোধ ,বিভিন্ন সুবিধা ,অফার ,নিরাপত্তা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহার একই ধরণের হয়ে থাকে।
I am Hasina Khatun, working in a private bank in Bangladesh and also writing for this website in my free time.