এক পলকে
ইবিএল মাস্টার কার্ড কি
আমরা যারা দেশের বাইরে ভ্রমণ ও অনলাইন কেনাকাটা করি তাদের জন্য যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হলো একটি EBL মাস্টার কার্ড। এটি একটি ডুয়েল কারেন্সি মাস্টার কার্ড যা ইস্যু করে জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড। এটি ইবিএল একুয়া মাস্টার কার্ড নামেও পরিচিত। এটি টাকা ও ডলার দুই ধরণের সুবিধাই প্রদান করে থাকে।আরো জানুন ভিসা কার্ড কি
সুপ্রিয় পাঠক-পাঠিকা গণ আজকের আর্টিকেলে আপনারা ইবিএল মাস্টার কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। ইবিএল মাস্টার কার্ড সম্পর্কে এমন কিছু প্রশ্ন আপনাদের মনে জগতে পারে তার উত্তর বিস্তারিত ভাবে নিম্নে উল্লেখ করা হলো ।
আরো জানুন মাস্টার কার্ড এর কাজ কি
এটি কি প্রিপেইড মাস্টার কার্ড
হ্যাঁ,এটি একটি প্রিপেইড মাস্টার কার্ড ।এই কার্ডে আপনি যেকোনো সময় ডলার রিচার্জ করতে পারবেন এবং যে কোনো দেশের ওয়েবসাইটে অনলাইন পেমেন্টও করতে পারবেন।
এটি কি ডুয়েল কারেন্সি মাস্টার কার্ড
হ্যাঁ,এটি একটি ডুয়েল কারেন্সি মাস্টার কার্ড যা টাকা ও ডলার দুটোই রেফার করে।
কার্ডটি নিতে কি ব্যাঙ্ক একাউন্ট থাকা লাগবে
না, কোনো ব্যাঙ্ক একাউন্ট ছাড়াই আপনি ব্যাঙ্ক থেকে এই ডুয়েল কারেন্সি কার্ডটি নিতে পারবেন।
অ্যাকুয়া মাস্টার কার্ড দিয়ে কি অনলাইন ওয়েবসাইট পেমেন্ট করা যায়
হ্যাঁ, এই কার্ড ব্যবহার করে আপনি যে কোনো অনলাইন ওয়েবসাইটে পেমেন্ট করতে পারবেন এবং এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার কার্ডে ই-কমার্স এনরোলমেন্ট থাকতে হবে।
সিটি ব্যাংকের ডেবিট ক্রেডিট এবং মাস্টার কার্ড চার্জ সুবিধা সমূহ
পাসপোর্ট ছাড়া কি এই কার্ডটি নেওয়া সম্ভব
না, কার্ডটি পেতে হলে অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট থাকতে হবে কেননা কার্ডটি থেকে সব ধরণের সুযোগ সুবিধা পেতে হলে কার্ডটি অবশ্যই এন্ডোর্সমেন্ট করতে হবে আপনার পাসপোর্ট দ্বারা। পাসপোর্ট না থাকলে শুধু বাংলাদেশি সুবিধা নিতে পারবেন কিন্তু ইউএস ডলার ব্যবহার করতে পারবে না।
এন্ডোর্সমেন্ট কি
এন্ডোর্সমেন্ট হলো ডলার অথবা বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহার করার অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়া। এটি করতে হলে অবশ্যই পাসপোর্ট থাকতে হবে।আপনি কত ডলারএন্ডোর্সমেন্ট করতে চান সেই অনুযায়ী ব্যাঙ্ক অফিসার আপনার কার্ডের পিছনে সিল মেরে দিবে।
অ্যাকুয়া মাস্টার কার্ডে আপনি সর্বোচ্চ কত ডলার এন্ডোর্সমেন্ট করতে পারবেন
অ্যাকুয়া মাস্টার কার্ডে আপনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর জন্য সর্বোচ্চ ৫হাজার ডলার পর্যন্ত এন্ডোর্সমেন্ট করতে পারবেন। এবং ননসার্কভুক্ত দেশগুলোর জন্য সর্বোচ্চ ৭ হাজার ডলার পর্যন্ত এন্ডোর্সমেন্ট করতে পারবেন।অর্থাৎ সর্বমোট ১২ হাজার ডলার পর্যন্ত এন্ডোর্সমেন্ট করতে পারবেন।
ইবিএল মাস্টার কার্ডে আপনি সর্বনিম্ন কত ডলার এন্ডোর্সমেন্ট করতে পারবেন
এই কার্ডটিতে সর্বনিম্ন এন্ডোর্সমেন্ট করার কোনো সীমিত সীমা নেই আপনি চাইলে ১ ডলার পর্যন্ত এন্ডোর্সমেন্ট করতে পারবেন।
আরো জানুন ইসলামী ব্যাংকের ডুয়েল কারেন্সি কার্ড সম্পর্কে
অ্যাকুয়া মাস্টার কার্ডের বাৎসরিক চার্জ কত
এই কার্ডটির বাৎসরিক কোনো চার্জ নেই। তবে কার্ডটি নেওয়ার সময় আপনাকে ৭৫ টাকা ভ্যাট সহ তিন বছরের জন্য ৫০০ টাকা দিতে হতে পারে।
এই কার্ডটিতে কোনো হিডেন চার্জ আছে কি
না, এই কার্ডটিতে কোনো প্রকার হিডেন চার্জ নেই। কিন্তু ফোনে কার্ডটির লেনদেনের ব্যাপারে এসএমএস এলার্টের জন্য বৎসরে ২০০ টাকা চার্জ দিতে হতে পারে।
এই কার্ডটি দ্বারা কি এটিএম বুথের উইদ্র করা যায়
হ্যাঁ, এই কার্ডটি দিয়ে এটিএম বুথের উইদ্র করা যায়। এবং এটি দ্বারা দেশ-বিদেশে এটিএম বুথের উইদ্র চার্জ করা যায়। ইস্টার্ন ব্যাংকার এটিএম থেকে অর্থ উত্তোলনের জন্য কোনো চার্জ দিতে হয় না। কিন্তু অন্নান্য মাস্টার কার্ড দ্বারা টাকা উত্তোলন করলে প্রতি ট্রানজেক্শনে ২৫ টাকা করে চার্জ কেটে নেওয়া হয়।
আপনি কার্ড এর ব্যালেন্স কিভাবে চেক করবেন
ইবিএল স্কাই ব্যাঙ্কিং দ্বারা আপনি সহজেই আপনার ব্যালেন্স চেক করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে ইবিএল স্কাই ব্যাঙ্কিং app টি ইন্সটল করতে হবে।
ইবিএল মাস্টার কার্ডটির বিশেষ সুবিধাসমূহ
১.আপনি এই কার্ডটি ইস্টার্ন ব্যাংকের যে কোনো শাখা থেকে নিতে পারেন এবং ডুয়েল কারেন্সি সুবিধা পাবেন।
২.কার্ডটি ব্যবহার করে আপনি যে কোনো ওয়েবসাইট থেকে কেনাকাটা করতে পারবেন।
৩.যে কোনো সময় ব্যাংকে গিয়ে ইউএসডি ও বিডিটি রিচার্জ করতে পারবেন।
৪.এই মাস্টার কার্ডটি সাপোর্ট করে এরকম যে কোনো এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
৫.বিদেশে ভ্রমণের সময় সাথে নিয়ে যেতে পারবেন এবং যে কোনো জায়গায় যে কোনো সময় পেমেন্ট করতে পারবেন।
৬.সবসময় পাসপোর্ট নিয়ে ডলার লোড করার প্রয়োজন হয় না।
৭.ইউটিউব ও ফেসবুকে বুস্টিং করতে পারবেন।
৮.কার্ডের হোল্ডার ছাড়াই যে কোনো ব্যক্তি গিয়ে কার্ডে ডলার লোড করতে পারবে।
৯.সব ধরনের ট্রানজেক্শন এলার্ট আপনি মোবাইল এসএমএস এর মাধ্যমে পেয়ে যাবেন।
১০.ডলার রিচার্জ করতে কোনো অতিরিক্ত চার্জ প্রযোজ্য হবে না।
কার্ডটি নিতে প্রয়োজনীয় নথিপত্র
১.আপনার ব্যক্তিগত পরিচয়পত্র (NID )কার্ডের ফটোকপি।
২.পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি।
৩.ডুয়েল কারেন্সির জন্য অবশ্যই পাসপোর্ট লাগবে।
৪.ইউটিলিটি বিলের একটা ফটোকপি লাগবে।
৫.৩ বছরের জন্য চার্জ ও ভ্যাটসহ ৫৭৫ টাকা লাগবে।
একুয়া মাস্টার কার্ড কিভাবে পেতে পারেন
একুয়া মাস্টার কার্ডটি সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে যেমন :ইনস্ট্যান্ট ও কাস্টমাইজড। ইনস্ট্যান্ট কার্ডটি নিতে চাইলে ব্যাঙ্ক আপনাকে এটি সাথে সাথেই প্রদান করবে তবে এই কার্ডটিতে আপনার নাম লেখা থাকবে না অপর দিকে কাস্টমাইজড কার্ডটি নিতে চাইলে আপনাকে এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে এবং এই কার্ডটিতে আপনার নাম লেখা থাকবে।
কার্ডটি নিতে প্রয়োজনীয় প্রসেস
প্রথমে আপনাকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলোর সাথে ৫৭৫ টাকা জমা দিতে হবে। এখন আপনি যদি ডলার ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই পাসপোর্ট জমা দিতে হবে আর যদি পাসপোর্ট না থাকে তাহলে ওই কার্ডটি দ্বারা আপনি কোনো ইন্টারন্যাশনাল লেনদেন করতে পারবেন না শুধু বাংলাদেশে লেনদেন করতে পারবেন।
এখন যদি আপনার পাসপোর্ট থাকে এবং আপনি ডলার ব্যবহার করতে চান তাহলে অফিসারকে সে ব্যাপারে বলুন এবং আপনার পাসপোর্টটি উনাকে দিন এনডোর্সমেন্ট করার জন্য এবং ই-কমার্স ব্যবহার করে কোনো কিছু কেনাকাটানকোর্টে চাইলে সেটিও একসাথে একটিভ করে নিন।
কার্ডের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিয়ে সকল নিয়মকানুন কমপ্লিট করার পর কার্ডটি আপনাকে সাথে সাথে দিয়ে দেওয়া হবেএওবং তখনই আপনি টাকা বা ডলার লোড করার জন্য জমা দিতে পারবেন। তবে কার্ডটি পরিপূর্ণ ভাবে সক্রিয় হওয়ার পর আপনি এটি ব্যবহার ও ব্যালান্স চাক করতে পারবেন।
কার্ডটি একটিভ করার জন্য কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে আপনার কার্ডটি একটিভ করুন। এখন আপনি যদি এনডোর্সমেন্ট ও ই-কমার্স এক্টিভ করে থাকেন তাহলে কার্ডটি সম্পর্ণরূপে ব্যবহার উপযোগী হতে ৫-৭ দিনসময় লাগতে পারে।
অতঃপর আপনি কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে আপনার কার্ডটি একটিভ হয়েছে কিনা জেনে নিতে পারেন। কনফার্ম হয়ে গেলে আপনি আপনার কার্ডটি যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন।
কার্ডটি ব্যাবহারে যে সকল সতর্কতা প্রয়োজন
- আপনার কার্ডের কোনো তথ্য কখনোই কারো সাথে শেয়ার করবেন না
- আপনার ব্যক্তিগত পিন নম্বর গোপন রাখুন।
- যে ওয়েবসাইট ব্যবহার করবেন অবশ্যই সে ওয়েবসাইটের এসএসএল সার্টিফিকেট আছে কি না তা জেনে শুনে ব্যাবহার করবেন।
- ই -কমার্স সাইট গুলোতে কার্ড ব্যাবহারে সতর্কতা অবলম্বন করুন। ফেইসবুক ,গুগল ,আলী -এক্সপ্রেস ,আমাজন -সহ বিশ্বাসযোগ্য সাইট গুলোতে শুধু মাত্র কার্ডটি ব্যবহার করুন।
- যে সাইট গুলোতে SSL নেই অর্থাৎ https ছাড়া ওয়েবসাইট গুলোতে কার্ড ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন
- কার্ডের Expire Date এবং Cvv code কারো সাথে শেয়ার করবেন না।
- যদি আপনার কার্ডটি হারিয়ে যায় সাথে সাথে হেল্পলাইনে কল দিয়ে অবশ্যই কার্ডটি লক করে দিবেন।
কার্ড ব্যবহারের কিছু অসুবিধা
>ফ্রিল্যান্সারদের জন্য তাদের ফ্রিল্যান্সিং করা অর্থ এই কার্ডের মাধ্যমে আনতে পারবেন না।
>কার্ডের সকল ইনফরমেশন অন্য কারো কাছে গেলেই সে চাইলেই আপনার কোডটি ব্যবহার করতে পারবে।
>ওয়েবসাইটে পেমেন্টের ব্যাপারে টু ফ্যাক্টর সিকিউরিটি না থাকার কারণে আপনার কার্ডটি ঝুঁকিতে থেকেই যায়।
বাংলালিংক নিয়ে এলো ইবিএল মাস্টারকার্ডের সাথে অংশীদারত্ব কো-ব্র্যান্ডেড কার্ড
বর্তমানে ইস্টার্ণ ব্যাংক পিএলসি ইবিএল মাস্টারকার্ডের সাথে অংশীদারত্বের মাধ্যমে বাংলালিংক নিয়ে এসেছে অরেঞ্জ ক্লাব সদস্যদের জন্য ৩টি নতুন কো-ব্র্যান্ডেড কার্ড।
ডিজিটাল অপারেটর বাংলালিংক গ্রাহকদের ক্ষমতায়ন করার মধ্য দিয়ে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে ডিজিটাল সমাধান ও সময়োপযোগী নানান অফার।
এরই ধারাবাহিকতায় তারা যে ৩টি কার্ড নিয়ে এসেছে সে কার্ডগুলো হলো- মাস্টারকার্ড ওয়ার্ল্ড ক্রেডিট কার্ড,মাস্টারকার্ড টাইটানিয়াম ক্রেডিট কার্ড এবং মাস্টারকার্ড প্রিপেইড কার্ড।
বাংলালিংক ইউজাররা লয়্যাল্টি প্রোগ্রাম ‘বাংলালিংক অরেঞ্জ ক্লাবের’ সদস্যরা বিশেষ অফার ও কেনাকাটার পাশাপাশি বিশেষ পয়েন্ট অর্জন ও রিডিম এর সুযোগ পাবেন।
এছাড়াও ইস্টার্ণ ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বক্তব্য মতে এই কার্ড গুলো অরেঞ্জ ক্লাবের সদস্যদের নতুন ও বিশেষ লাইফস্টাইল সুবিধা দিবে এবং গ্রাহকদের বিশ্বমানের সেবা প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।এছাড়া কো-ব্র্যান্ডেড
কার্ড সমূহ এই গ্রাহকদের সুরক্ষিত, নিরাপদ ও সুবিধাজনক লেনদেনে সহায়তা করবে। তাদের শপিং,ডাইনিং, ভ্রমণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ সুবিধা প্রদান করবে।
এছাড়াও ইবিএল মাস্টার কার্ড সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য পেতে আপনি ব্যাংকের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।
যে কোনো প্রয়োজনে হেল্পলাইন
১৬২৩০ (বাংলাদেশ থেকে )
+৮৮-০২-৮৩৩২২৩২ (বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকে )